ওখানে পুকুর ছিল। টলমল করত পানি। পানিতে ছিল মাছ। কোথাও কচুরিপানা ও জলজ উদ্ভিদ। সেই পুকুর ভরাট করে নির্মাণ করা হয় অট্টালিকা। দু-তিনতলা নয়, নয়তলা ভবন। সে ভবন ভাড়া নিয়েছেন পোশাকশিল্প মালিকেরা। প্রতিষ্ঠা করেছেন লাভজনক কারখানা। এক দালানে একটি নয়—চার চারটে পোশাকশিল্প। সেখানে কাজ করেন হাজার হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক। ওই ভবনে রয়েছে শ তিনেক দোকান। একটি বেসরকারি ব্যাংক।
হাতিরঝিলের বুকের ভেতরে যেমন গড়ে উঠেছে বিশাল সৌধ, তেমনি সাভারে পুকুর ভরাট করে নির্মিত হয়েছিল রানা প্লাজা। সেটি বুধবার সকালে অবলীলায় ধসে পড়ল। ধসে পড়ল হাজার হাজার শ্রমিকের মাথার ওপর। ওঁদের পুড়ে মরাই নিয়তি। এবার দালানচাপায় মরলেন। কতজন যে মরেছেন তার সঠিক সংখ্যা কোনো দিনই জানা যাবে না। যেমন এর আগের দুর্ঘটনাগুলোতে পুড়ে ছাই হয়ে কতজন মারা যান সে তথ্য আজও জানা যায়নি।
রানা প্লাজায় যাঁরা চাপা পড়েছেন তৎক্ষণাৎ তাঁদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধারের আগেই তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। টিভিতে দেখা গেল বিএনপির নেতা বলছেন, দয়াপরবশ হয়ে ‘ওই এলাকায় হরতাল আমরা শিথিল করছি।’ আঠার দলের নেতাদের এ কম উদারতা নয়!
রাষ্ট্রের আর কোনো অন্যায়-অবিচারে নয়, বিরোধী দলের ডাকা ঘন ঘন হরতালে পোশাকশিল্পের মালিকেরা বড়ই বিচলিত। গত মঙ্গলবার বিজিএমইএ নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ঘন ঘন হরতাল, সহিংসতা ও প্রাণহানিতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিদেশি ক্রেতারা বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছেন, আস্থা হারাচ্ছেন। হরতাল নামক বিশাল দানবের উপর্যুপরি আঘাতে ৩০ বছরে তিল তিল করে গড়ে ওঠা তৈরি পোশাকশিল্প ক্ষতবিক্ষত ও বিপর্যস্ত হচ্ছে। একে গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠনের প্রাজ্ঞ সভাপতি বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প গত ৩০ বছরের ইতিহাসে এত ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়নি। চলমান সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পোশাকশিল্পের অস্তিত্ব কীভাবে টিকিয়ে রাখব? কীভাবে টিকে থাকব? আমাদের বাইরের খোলসটাই আপনারা দেখছেন। ভেতরের রক্তক্ষরণটা দেখতে পাচ্ছেন না।’
অতি খাঁটি কথা। হরতালওয়ালারা তাঁদের শিল্পটাকেই গলা টিপে হত্যা করছে। এখন মালিকদের আমরা যা দেখছি তা খোলস। মানুষ দৃষ্টিশক্তিহীন বলে তাঁদের ভেতরের রক্তক্ষরণটা দেখতে পাচ্ছেন না। স্পেকট্রাম, তাজরীন প্রভৃতির হতভাগ্য শ্রমিকদের কোনো মালিকই গলা টিপে হত্যা করেননি। তাঁদের হত্যা করা হয়েছে পুড়িয়ে, মালিকদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে ভেতরে। রানা প্লাজার শ্রমিকদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে শরীরে। তফাৎ শুধু এটুকুই।
গত এক যুগে হরতালে যত লোক মারা গেছে, পোশাকশিল্পে পুড়ে ও পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছে তার বহু গুণ বেশি। তাতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় না? ওসব হত্যাকাণ্ডের দায় কার? এ প্রশ্নের জবাব দিতে আমাদের রাষ্ট্র নেই, কেউ নেই।
অমন একটি দুর্বল ভবনে অত কারখানা কেন? বিজিএমইএর বিজ্ঞদের কাছে জবাব চাই। আগেরদিন ভবনে ফাটল দেখা দেওয়ার পরও ঠেলে শ্রমিকদের যে মালিকেরা কারখানায় ঢুকিয়েছিলেন হত্যাকাণ্ডের দায়ে মৃত্যুদণ্ডই তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি। ভবনের মালিক, নির্মাণ-প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে—এটাই এখন জনগণের দাবি।
হাতিরঝিলের বুকের ভেতরে যেমন গড়ে উঠেছে বিশাল সৌধ, তেমনি সাভারে পুকুর ভরাট করে নির্মিত হয়েছিল রানা প্লাজা। সেটি বুধবার সকালে অবলীলায় ধসে পড়ল। ধসে পড়ল হাজার হাজার শ্রমিকের মাথার ওপর। ওঁদের পুড়ে মরাই নিয়তি। এবার দালানচাপায় মরলেন। কতজন যে মরেছেন তার সঠিক সংখ্যা কোনো দিনই জানা যাবে না। যেমন এর আগের দুর্ঘটনাগুলোতে পুড়ে ছাই হয়ে কতজন মারা যান সে তথ্য আজও জানা যায়নি।
রানা প্লাজায় যাঁরা চাপা পড়েছেন তৎক্ষণাৎ তাঁদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধারের আগেই তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। টিভিতে দেখা গেল বিএনপির নেতা বলছেন, দয়াপরবশ হয়ে ‘ওই এলাকায় হরতাল আমরা শিথিল করছি।’ আঠার দলের নেতাদের এ কম উদারতা নয়!
রাষ্ট্রের আর কোনো অন্যায়-অবিচারে নয়, বিরোধী দলের ডাকা ঘন ঘন হরতালে পোশাকশিল্পের মালিকেরা বড়ই বিচলিত। গত মঙ্গলবার বিজিএমইএ নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ঘন ঘন হরতাল, সহিংসতা ও প্রাণহানিতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিদেশি ক্রেতারা বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছেন, আস্থা হারাচ্ছেন। হরতাল নামক বিশাল দানবের উপর্যুপরি আঘাতে ৩০ বছরে তিল তিল করে গড়ে ওঠা তৈরি পোশাকশিল্প ক্ষতবিক্ষত ও বিপর্যস্ত হচ্ছে। একে গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠনের প্রাজ্ঞ সভাপতি বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প গত ৩০ বছরের ইতিহাসে এত ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়নি। চলমান সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পোশাকশিল্পের অস্তিত্ব কীভাবে টিকিয়ে রাখব? কীভাবে টিকে থাকব? আমাদের বাইরের খোলসটাই আপনারা দেখছেন। ভেতরের রক্তক্ষরণটা দেখতে পাচ্ছেন না।’
অতি খাঁটি কথা। হরতালওয়ালারা তাঁদের শিল্পটাকেই গলা টিপে হত্যা করছে। এখন মালিকদের আমরা যা দেখছি তা খোলস। মানুষ দৃষ্টিশক্তিহীন বলে তাঁদের ভেতরের রক্তক্ষরণটা দেখতে পাচ্ছেন না। স্পেকট্রাম, তাজরীন প্রভৃতির হতভাগ্য শ্রমিকদের কোনো মালিকই গলা টিপে হত্যা করেননি। তাঁদের হত্যা করা হয়েছে পুড়িয়ে, মালিকদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে ভেতরে। রানা প্লাজার শ্রমিকদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে শরীরে। তফাৎ শুধু এটুকুই।
গত এক যুগে হরতালে যত লোক মারা গেছে, পোশাকশিল্পে পুড়ে ও পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছে তার বহু গুণ বেশি। তাতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় না? ওসব হত্যাকাণ্ডের দায় কার? এ প্রশ্নের জবাব দিতে আমাদের রাষ্ট্র নেই, কেউ নেই।
অমন একটি দুর্বল ভবনে অত কারখানা কেন? বিজিএমইএর বিজ্ঞদের কাছে জবাব চাই। আগেরদিন ভবনে ফাটল দেখা দেওয়ার পরও ঠেলে শ্রমিকদের যে মালিকেরা কারখানায় ঢুকিয়েছিলেন হত্যাকাণ্ডের দায়ে মৃত্যুদণ্ডই তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি। ভবনের মালিক, নির্মাণ-প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে—এটাই এখন জনগণের দাবি।
0 comments:
Post a Comment