‘সন্ধান চাই, জীবিত অথবা মৃত’—কাগজে লেখা এই বাক্যের সঙ্গে ছবি, নাম, ঠিকানা, মুঠোফোন নম্বর। কোনোটিতে ছবি-পরিচয় দিয়ে লেখা ‘সন্ধান চাই’ মানুষের সন্ধান চেয়ে এমন পোস্টারে ছেয়ে গেছে সাভারের বিভিন্ন হাসপাতালের প্রবেশপথ, অধরচন্দ্র স্কুল ও আশপাশের দেয়াল।
পাশাপাশি অনেকে প্রিয় স্বজনের খোঁজে ছবিসহ নাম-পরিচয় লেখা কাগজ বা কেবল ছবি হাতে নিয়ে ঘুরছেন। কোনো ছবি পাসপোর্ট সাইজের, কোনোটি বড়, কোনোটি স্বামী, স্ত্রী, ভাই বা পরিবারের সঙ্গে। ছবিগুলো তোলা হয়েছে স্টুডিওতে, সেজেগুজে। এখন এসব ছবির কোনো কোনো মানুষ চাপা পড়ে আছেন ধ্বংসস্তূপে। বাইরে থাকা স্বজনেরা কান্নাভরা চোখে খুঁজে ফিরছেন তাঁদের। ছবি ছাড়া পোস্টারও আছে, সেই সব পোস্টারে দেওয়া আছে নিখোঁজ ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র।
সাভার থানার পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ভবনধসের ঘটনায় নিখোঁজের সংখ্যা ৬৩৮ জন। তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর করা তালিকা অনুযায়ী এই সংখ্যা ৬৯০।
ফায়ার সার্ভিস ও গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর হিসাব অনুযায়ী, ভবনটি ধসে পড়ার সময় সেখানে তিন হাজারের মতো মানুষ কাজ করছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৩০০ লাশ আর জীবিত অবস্থায় দুই হাজারের বেশি মানুষ। ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে জীবিত উদ্ধার করা মানুষ ও লাশের সংখ্যা।
সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণকক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ২৯৩টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬১৩ জন। আর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৮৪ জন। মন্ত্রণালয়ের কাছে সব মিলিয়ে এক হাজার ৭৯০ জনকে জীবিত ও মৃত অবস্থায় উদ্ধারের হিসাব রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া কয়েকজন পোশাকশ্রমিক বলেছেন, তাঁরা আশপাশে অনেক লাশ দেখেছেন। উদ্ধারকর্মীরাও জানিয়েছেন, এখনো অনেক লাশ আটকে রয়েছে। এই আটকে পড়াদেরই খুঁজে ফিরছেন স্বজনেরা।
নিখোঁজ কত: সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুর রহমান বলেন, সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাঁদের নিখোঁজ তালিকায় ৬৩৮ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ক্লাবের শিক্ষার্থীরা নিখোঁজ মানুষের তালিকা করা শুরু করেছেন গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রবেশমুখে টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসেছে তাঁদের একটি অংশ। আর ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আরেকটি অংশ সাভারের বিভিন্ন হাসপাতাল, অধরচন্দ্র স্কুল আর ঘটনাস্থলে ঘুরে ঘুরে তালিকা করছে। NEWS IN BANGLADESH
এই দলের একজন শিক্ষার্থী রাজিবুল ইসলাম বলেন, রাত আটটা পর্যন্ত তাঁরা ৬৯০ জন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা করতে পেরেছেন। নিখোঁজ ব্যক্তির নাম, বয়স, খোঁজে আসা অভিভাবক বা ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও মুঠোফোন নম্বর তাঁরা তথ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছেন। আরও প্রায় ৩০টি নাম কাগজে লিখে নিয়ে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। সেগুলো যাচাই করে তালিকাভুক্ত করা হবে।
স্বজনের খোঁজে পথে পথে: নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে সাভারের পথে পথে তিন দিন ধরে ঘুরছেন অসংখ্য মানুষ। তাঁরা বিভিন্ন হাসপাতাল, অধরচন্দ্র স্কুল, ঘটনাস্থলসহ আশপাশে খুঁজছেন স্বজনদের।
গতকাল সকালে এনাম হাসপাতালের পাশে দেখা যায়, ছেলে সঙ্গীত দাসের খোঁজে দেয়ালে পোস্টার লাগাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব সত্যজিৎ দাস। সঙ্গীত রানা প্লাজার ষষ্ঠতলায় কাজ করতেন। ছেলের খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে তিনিই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পাওয়া পানি আর খাবার খেয়েই রয়েছেন তিন দিন। খাবার কেনার মতো পর্যাপ্ত টাকাও তাঁর কাছে নেই।
সত্যজিতের সঙ্গে কথা বলার সময় চারদিক থেকে ঘিরে ধরলেন জনা পঞ্চাশেক মানুষ। সবাই ঘুরছেন নিখোঁজ স্বজনের সন্ধানে। কার কাছে গেলে মিলবে খোঁজ, তা জানেন না কেউই। তাই যেখানেই সামান্যতম সুযোগ দেখছেন, সেখানেই ধরনা দিচ্ছেন তাঁরা।
এঁদের মধ্যে ভাই কামরুলকে খুঁজছেন মিন্টু, মেয়ে শান্তাকে খুঁজছেন শাহিদা, স্ত্রী সুমীকে খুঁজছেন আসাদুল, ভগ্নিপতি কামালের খোঁজে এসেছেন সুমন, ভাতিজা জাহিদকে খুঁজছেন জিয়াউর, ভগ্নিপতি রিদওয়ান ও ভাগনে শিহাবকে (রিদওয়ানের ছেলে) খুঁজছেন জাফর আলী।
এ রকম অনেক মানুষ ঘুরছেন হাসপাতালে, অধরচন্দ্র স্কুলে, ঘটনাস্থলে। সাভারে খুঁজে না পেয়ে কেউ কেউ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গেও আসছেন। শনাক্ত না হওয়া ২৩টি লাশ রয়েছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।
পাশাপাশি অনেকে প্রিয় স্বজনের খোঁজে ছবিসহ নাম-পরিচয় লেখা কাগজ বা কেবল ছবি হাতে নিয়ে ঘুরছেন। কোনো ছবি পাসপোর্ট সাইজের, কোনোটি বড়, কোনোটি স্বামী, স্ত্রী, ভাই বা পরিবারের সঙ্গে। ছবিগুলো তোলা হয়েছে স্টুডিওতে, সেজেগুজে। এখন এসব ছবির কোনো কোনো মানুষ চাপা পড়ে আছেন ধ্বংসস্তূপে। বাইরে থাকা স্বজনেরা কান্নাভরা চোখে খুঁজে ফিরছেন তাঁদের। ছবি ছাড়া পোস্টারও আছে, সেই সব পোস্টারে দেওয়া আছে নিখোঁজ ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র।
সাভার থানার পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ভবনধসের ঘটনায় নিখোঁজের সংখ্যা ৬৩৮ জন। তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর করা তালিকা অনুযায়ী এই সংখ্যা ৬৯০।
ফায়ার সার্ভিস ও গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর হিসাব অনুযায়ী, ভবনটি ধসে পড়ার সময় সেখানে তিন হাজারের মতো মানুষ কাজ করছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৩০০ লাশ আর জীবিত অবস্থায় দুই হাজারের বেশি মানুষ। ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে জীবিত উদ্ধার করা মানুষ ও লাশের সংখ্যা।
সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণকক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ২৯৩টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬১৩ জন। আর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৮৪ জন। মন্ত্রণালয়ের কাছে সব মিলিয়ে এক হাজার ৭৯০ জনকে জীবিত ও মৃত অবস্থায় উদ্ধারের হিসাব রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া কয়েকজন পোশাকশ্রমিক বলেছেন, তাঁরা আশপাশে অনেক লাশ দেখেছেন। উদ্ধারকর্মীরাও জানিয়েছেন, এখনো অনেক লাশ আটকে রয়েছে। এই আটকে পড়াদেরই খুঁজে ফিরছেন স্বজনেরা।
নিখোঁজ কত: সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুর রহমান বলেন, সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাঁদের নিখোঁজ তালিকায় ৬৩৮ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ক্লাবের শিক্ষার্থীরা নিখোঁজ মানুষের তালিকা করা শুরু করেছেন গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রবেশমুখে টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসেছে তাঁদের একটি অংশ। আর ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আরেকটি অংশ সাভারের বিভিন্ন হাসপাতাল, অধরচন্দ্র স্কুল আর ঘটনাস্থলে ঘুরে ঘুরে তালিকা করছে। NEWS IN BANGLADESH
এই দলের একজন শিক্ষার্থী রাজিবুল ইসলাম বলেন, রাত আটটা পর্যন্ত তাঁরা ৬৯০ জন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা করতে পেরেছেন। নিখোঁজ ব্যক্তির নাম, বয়স, খোঁজে আসা অভিভাবক বা ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও মুঠোফোন নম্বর তাঁরা তথ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছেন। আরও প্রায় ৩০টি নাম কাগজে লিখে নিয়ে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। সেগুলো যাচাই করে তালিকাভুক্ত করা হবে।
স্বজনের খোঁজে পথে পথে: নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে সাভারের পথে পথে তিন দিন ধরে ঘুরছেন অসংখ্য মানুষ। তাঁরা বিভিন্ন হাসপাতাল, অধরচন্দ্র স্কুল, ঘটনাস্থলসহ আশপাশে খুঁজছেন স্বজনদের।
গতকাল সকালে এনাম হাসপাতালের পাশে দেখা যায়, ছেলে সঙ্গীত দাসের খোঁজে দেয়ালে পোস্টার লাগাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব সত্যজিৎ দাস। সঙ্গীত রানা প্লাজার ষষ্ঠতলায় কাজ করতেন। ছেলের খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে তিনিই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পাওয়া পানি আর খাবার খেয়েই রয়েছেন তিন দিন। খাবার কেনার মতো পর্যাপ্ত টাকাও তাঁর কাছে নেই।
সত্যজিতের সঙ্গে কথা বলার সময় চারদিক থেকে ঘিরে ধরলেন জনা পঞ্চাশেক মানুষ। সবাই ঘুরছেন নিখোঁজ স্বজনের সন্ধানে। কার কাছে গেলে মিলবে খোঁজ, তা জানেন না কেউই। তাই যেখানেই সামান্যতম সুযোগ দেখছেন, সেখানেই ধরনা দিচ্ছেন তাঁরা।
এঁদের মধ্যে ভাই কামরুলকে খুঁজছেন মিন্টু, মেয়ে শান্তাকে খুঁজছেন শাহিদা, স্ত্রী সুমীকে খুঁজছেন আসাদুল, ভগ্নিপতি কামালের খোঁজে এসেছেন সুমন, ভাতিজা জাহিদকে খুঁজছেন জিয়াউর, ভগ্নিপতি রিদওয়ান ও ভাগনে শিহাবকে (রিদওয়ানের ছেলে) খুঁজছেন জাফর আলী।
এ রকম অনেক মানুষ ঘুরছেন হাসপাতালে, অধরচন্দ্র স্কুলে, ঘটনাস্থলে। সাভারে খুঁজে না পেয়ে কেউ কেউ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গেও আসছেন। শনাক্ত না হওয়া ২৩টি লাশ রয়েছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।
source: prothom-alo
0 comments:
Post a Comment