আসামির পক্ষ নিয়েছে পুলিশ!
খিলগাঁওয়ের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ News24
স্কুলে যাওয়ার পথে এক ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে খুনের আসামি ও রাজধানীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রুশিয়া বেগম ওরফে মাফিয়ার ছেলে মো. হিরণ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার ১৩ দিন পরও একমাত্র আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এখন আসামির পরিবার ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আপস করার জন্য মেয়েটির পরিবারকে চাপ দিচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী রুশিয়ার সঙ্গে খিলগাঁও থানার পুলিশের পুরোনো সখ্য আছে। এ কারণে পুলিশ আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখের সঙ্গে কথা বলেও তার প্রমাণ মিলেছে। গত ৩০ এপ্রিল এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে ওসি উল্টো আসামির পক্ষ নিয়ে বলেন, ‘আমি ধারণা করছি, মেয়েটির সাথে ছেলেটার একটা বোঝাপড়া ছিল। না হলে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় সে চিৎকার করল না কেন?’
তবে মামলা নেওয়ার পর আসামিকে গ্রেপ্তার না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলেন, ‘একজন সহযোগী গ্রেপ্তার হয়েছে তো।’ ওসির সঙ্গে কথা বলতে বলতেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বপন কুমার দে সেখানে আসেন। ওসির সামনেই তিনি প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের বলেন, রুশিয়া নামের রাজধানীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর ছেলে হিরণ মেয়েটিকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। হিরণ নিজে হত্যা মামলাসহ বেশ কটি মামলার আসামি। মেয়েটি বাঁচার চেষ্টা করেছিল, শেষ পর্যন্ত পারেনি।
এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তার কথা শুনে ওসি বলেন, ‘এখনই যাও। আসামি গ্রেপ্তার কর।’ তবে গতকাল পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তারের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনা নিয়ে খিলগাঁও থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২২ এপ্রিল সকাল সাতটার দিকে মেয়েটি স্কুলের উদ্দেশে বের হয়। তিলপাপাড়া ক্লাবের সামনে এলে মো. হিরণ একটি মোটরসাইকেলে করে এসে মেয়েটিকে ধাক্কা দেয়। তারপর জোর করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেয়। আনুমানিক সকাল সোয়া নয়টার দিকে সবুজবাগ থানার বাসাবো খেলার মাঠের উল্টো দিকে ১০ মোড় নামের একটি বাড়ির সামনে নামানোর পর মেয়েটি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। হিরণ তাকে জোর করে একটি বাড়ির ভেতর ঢোকায় ও এলোপাতাড়ি মারধর করে। এরপর ওই বাড়ির লোকজনকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে সে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরে লোকজন উদ্ধার করে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। বর্তমানে মেয়েটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন। তার হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত রয়েছে। ওসিসির চিকিৎসক বিলকিস বেগম প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েটি ধর্ষণের শিকার।
এদিকে মেয়েটির এক স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের পর হিরণের পরিবার থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলা হয়। হিরণের মামা মো. দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বাবা সাত-আট বছর আগে মারা গেছেন। তিন-চারটি ফ্ল্যাটে ঠিকে ঝিয়ের কাজ করেন মেয়েটির মা। মেয়েটি ভালো ছাত্রী। ২৫০ জন ছাত্রীর ক্লাসে প্রথম পাঁচজনের মধ্যে তার অবস্থান। পরিবারটি সীমাহীন দারিদ্র্যে নিমজ্জিত। খিলগাঁওয়ের একটি ভাড়া ঘরে তারা থাকে। টিনের বাড়িটির বাইরের দিকে ছালা টাঙানো। কোনো দিন খাওয়া জোটে, কোনো দিন জোটে না। এলাকাবাসীর ধারণা, মেয়েটি দুর্বল জানতে পেরেই ইচ্ছে করে হিরণ তাকে ধর্ষণ করেছে।
খিলগাঁও, বাসাবো ও সবুজবাগ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হিরণ ২০১০ সালে শিল্প ব্যাংকের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক খাজা মো. মাহফুজুল হক খান (৭৩) হত্যাকাণ্ডের আসামি। ঈদের দিন বাড়ির সামনে মাদক ব্যবসা ও উচ্ছৃঙ্খলতার প্রতিবাদ করায় সাঙ্গপাঙ্গসহ হিরণ তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। হিরণের মা রুশিয়া বেগম এলাকায় চোর হিসেবে পরিচিত ছিল, এখন তাঁর পরিচিতি ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে। ধর্ষণের বিষয়টিতে এলাকাবাসী ভীষণ ক্ষুব্ধ। তবে ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।
সবুজবাগ থানার সাবেক উপপরিদর্শক এজাজ শফি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কমপক্ষে ২০ বার রুশিয়াকে গ্রেপ্তার করেছেন। একবার ৪০ ভরি সোনাসহ তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর ছেলে হিরণ শিল্প ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা খুনের ঘটনায় আটক হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। সব কটিতেই সে জামিনে মুক্ত। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুশিয়া প্রকাশ্যে বলে বেড়ায়, থানা-পুলিশ সব তার পকেটে। কেউ কিছু করতে পারবে না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী রুশিয়ার সঙ্গে খিলগাঁও থানার পুলিশের পুরোনো সখ্য আছে। এ কারণে পুলিশ আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখের সঙ্গে কথা বলেও তার প্রমাণ মিলেছে। গত ৩০ এপ্রিল এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে ওসি উল্টো আসামির পক্ষ নিয়ে বলেন, ‘আমি ধারণা করছি, মেয়েটির সাথে ছেলেটার একটা বোঝাপড়া ছিল। না হলে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় সে চিৎকার করল না কেন?’
তবে মামলা নেওয়ার পর আসামিকে গ্রেপ্তার না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলেন, ‘একজন সহযোগী গ্রেপ্তার হয়েছে তো।’ ওসির সঙ্গে কথা বলতে বলতেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বপন কুমার দে সেখানে আসেন। ওসির সামনেই তিনি প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের বলেন, রুশিয়া নামের রাজধানীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর ছেলে হিরণ মেয়েটিকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। হিরণ নিজে হত্যা মামলাসহ বেশ কটি মামলার আসামি। মেয়েটি বাঁচার চেষ্টা করেছিল, শেষ পর্যন্ত পারেনি।
এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তার কথা শুনে ওসি বলেন, ‘এখনই যাও। আসামি গ্রেপ্তার কর।’ তবে গতকাল পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তারের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনা নিয়ে খিলগাঁও থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২২ এপ্রিল সকাল সাতটার দিকে মেয়েটি স্কুলের উদ্দেশে বের হয়। তিলপাপাড়া ক্লাবের সামনে এলে মো. হিরণ একটি মোটরসাইকেলে করে এসে মেয়েটিকে ধাক্কা দেয়। তারপর জোর করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেয়। আনুমানিক সকাল সোয়া নয়টার দিকে সবুজবাগ থানার বাসাবো খেলার মাঠের উল্টো দিকে ১০ মোড় নামের একটি বাড়ির সামনে নামানোর পর মেয়েটি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। হিরণ তাকে জোর করে একটি বাড়ির ভেতর ঢোকায় ও এলোপাতাড়ি মারধর করে। এরপর ওই বাড়ির লোকজনকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে সে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরে লোকজন উদ্ধার করে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। বর্তমানে মেয়েটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন। তার হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত রয়েছে। ওসিসির চিকিৎসক বিলকিস বেগম প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েটি ধর্ষণের শিকার।
এদিকে মেয়েটির এক স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের পর হিরণের পরিবার থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলা হয়। হিরণের মামা মো. দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বাবা সাত-আট বছর আগে মারা গেছেন। তিন-চারটি ফ্ল্যাটে ঠিকে ঝিয়ের কাজ করেন মেয়েটির মা। মেয়েটি ভালো ছাত্রী। ২৫০ জন ছাত্রীর ক্লাসে প্রথম পাঁচজনের মধ্যে তার অবস্থান। পরিবারটি সীমাহীন দারিদ্র্যে নিমজ্জিত। খিলগাঁওয়ের একটি ভাড়া ঘরে তারা থাকে। টিনের বাড়িটির বাইরের দিকে ছালা টাঙানো। কোনো দিন খাওয়া জোটে, কোনো দিন জোটে না। এলাকাবাসীর ধারণা, মেয়েটি দুর্বল জানতে পেরেই ইচ্ছে করে হিরণ তাকে ধর্ষণ করেছে।
খিলগাঁও, বাসাবো ও সবুজবাগ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হিরণ ২০১০ সালে শিল্প ব্যাংকের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক খাজা মো. মাহফুজুল হক খান (৭৩) হত্যাকাণ্ডের আসামি। ঈদের দিন বাড়ির সামনে মাদক ব্যবসা ও উচ্ছৃঙ্খলতার প্রতিবাদ করায় সাঙ্গপাঙ্গসহ হিরণ তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। হিরণের মা রুশিয়া বেগম এলাকায় চোর হিসেবে পরিচিত ছিল, এখন তাঁর পরিচিতি ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে। ধর্ষণের বিষয়টিতে এলাকাবাসী ভীষণ ক্ষুব্ধ। তবে ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।
সবুজবাগ থানার সাবেক উপপরিদর্শক এজাজ শফি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কমপক্ষে ২০ বার রুশিয়াকে গ্রেপ্তার করেছেন। একবার ৪০ ভরি সোনাসহ তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর ছেলে হিরণ শিল্প ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা খুনের ঘটনায় আটক হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। সব কটিতেই সে জামিনে মুক্ত। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুশিয়া প্রকাশ্যে বলে বেড়ায়, থানা-পুলিশ সব তার পকেটে। কেউ কিছু করতে পারবে না।
source: prothom-alo
0 comments:
Post a Comment